ফজরের নামাজ কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয়
ইসলাম শান্তির ধর্ম ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। সেগুলো হলো কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাত। এই পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজের গুরুত্ব অধিক। নামাজ ফরজ ইবাদত।
মুসলমানগন দৈনিক পাঁচবার নামাজ পড়ে আল্লাহতালার কাছে নিজেকে নিবেদিত করে থাকেন। কোরআন পাকে নামাজ শব্দটি সরাসরি ৮২ বারের মতো উল্লেখ করা হয়েছে। নামাজের মাধ্যমেই একজন মুসলমান পাপ পূর্ণ কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে সক্ষম হয়।সুতরাং এ থেকে বোঝা যাচ্ছে নামাজ কতটা তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত।
মুসলমানগন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে থাকে।যেমন ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব ও এশা। আজকের এই পোস্টে ফজরের নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা নামাজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
Table of Contents
ফজরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি
মুসলমানগন দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকে। দিনের শুরু হয় যে নামাজ দিয়ে তাহলে ফজরের নামাজ। অর্থাৎ সূর্য উদয়ের আগে ফজরের সালাত আদায় করা হয়।
ফজরের নামাজ দুই প্রকার।তা হল ফজরের দুই রাকাত সুন্নত এবং ফজরের দুই রাকাত ফরজ অর্থাৎ ফজরের চার রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সবকিছুর ঊর্ধ্বে। হাদীস শরীফে এ সম্পর্কে বলে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু রয়েছে তার চেয়ে উত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭২৫)।
আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ হযরত মোহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া করলেও তোমরা এই দুই রাকাত সালাত কখনো ত্যাগ করো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১২৫৮)।
ফজরের নামাজ আগে সুন্নত না ফরজ
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন আছে। প্রত্যেকটি ওয়াক্ত ধারাবাহিকতার সাথে আদায় করতে হয়।প্রত্যেক মুসলমানেরই এটি দ্বীনি দায়িত্ব। ফজর নামাজের নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা আছে।
দেখুনঃ ফজরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি
ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত।দুই রাকাত সুন্নত এবং দুই রাকাত ফরজ। দুই রাকাত ফরজ। কেউ যদি আগে দুই রাকাত ফরজ আদায় করে এবং
তারপরে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করে তবে সে নামাজ ভুল হবে। সবসময়ই আগে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করে নিতে হয়।তারপর দুই রাকাত ফরজ আদায় করতে হয়।
ফজরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
সব নামাজ পড়ার আগে ওযু করে নিতে হয়। এতে করে শরীর পাক হয়। ফজরের দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত ফরজ একই নিয়মে আদায় করতে হয়। পার্থক্য শুধু নিয়তে।আগে ওযু করে নিতে হবে। এরপর জায়নামাজের দোয়া পড়তে হবে(ইন্নি ওয়াজ্জাহাতু ওজহিয়া লিল্লাযী ফাতারাচ্ছামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানিফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন)।
দেখুনঃ যোহরের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি
অতঃপর দুই রাকাত সুন্নত নিয়ত পড়তে হবে (নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তাআলা মুতাও য়াজজিহান্ ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আক্বার)। নিয়ত বাধার পর সানা পাঠ করতে হয়।এরপর সূরা ফাতিহা পড়ে যে কোন একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। অতঃপর সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম তিনবার অথবা বিজোড় সংখ্যক বার পড়ে নিতে হবে। সামিয়া লিমান হামিদা রাব্বানা লাকাল হামদ পড়ার পর সেজদা দিতে হবে।সিজদায় গিয়ে সুবহানা রাব্বিয়াল আলা তিনবার অথবা যেকোনো বিজোড় সংখ্যক বার পড়তে হবে।
আজকের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২২
দেখুনঃ আসর নামাজ কয় রাকাত ও কি কি
এভাবে দুইবার সেজদা দিতে হবে।সেজদা শেষ হলে প্রথমে তাশাহুদ ,এরপর দুরুদে ইব্রাহীম এবং দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হবে। দুই পাশের প্রথমে ডান পাশে এরপর বাম পাশে সালাম ফেরাতে হবে।সালাম ফিরানো শেষ মোনাজাত ধরতে হবে।এভাবে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত আদায় করতে হবে।
দুই রাকাত ফরজ নামাজ দুই রাকাত সুন্নত এর মতই,শুধু নিয়ত ভিন্ন।নিয়তটি হলো-নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
দেখুনঃ মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত ও কি কি
ফজরের নামাজের নিয়ম ও সূরা
ফজরের নামাজের নিয়ম রয়েছে এবং কিছু প্রয়োজনীয় সূরা ও দোয়া রয়েছে।আজকের এই পোস্টে ফজর নামাজের নিয়ম ও সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।আশা করি পোস্টটি পড়ে আপনার অনেক কিছু জানতে পারবেন। ফজর নামাজ শুরু করার পর সর্বপ্রথম জায়নামাজের দোয়া আদায় করতে হয়। সব নামাজে সুরা ফাতিহা অবশ্যই পাঠ করতে হয় সূরা ফাতিহা
দেখুনঃ এশার নামাজ কয় রাকাত ও কি কি
১.বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
২.আলহামদুলিল্লা-হি রাব্বিল আ-লামীন।
৩.আর রাহমা-নির রাহীম।
৪.মা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন।
৫.ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কানাছতা’ঈন।
৬.ইহদিনাসসিরা-তাল মুছতাকীম।
৭.সিরা-তাল্লাযীনা আন’আম তা’আলাইহিম।
৮.গাইরিল মাগদূ বি’আলাইহীম ওয়ালাদ্দাল্লীন)।
সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর যে কোন একটি সূরা যেমন সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস অথবা সূরা মাউন যেকোনো একটি মিলিয়ে নিয়ে পাঠ করা যায়।এভাবে ফজরের নামাজ আদায় করে নিতে হবে।আশা করি পোস্টটি আপনাদের জন্য অনেক উপকারী হবে।