এশার নামাজের নিয়ম, সূরা, নিয়ত এবং সঠিক নিয়মাবলী
ইসলাম হলো একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলাম সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে একটি জীবন ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা যায়।
ইসলামের একটি স্তম্ভ হচ্ছে নামাজ নামাজের মাধ্যমে বান্দা প্রভু নিকটে দোয়া করে ক্ষমা প্রার্থনা করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইরশাদ করেছেন’
কিয়ামতের দিন আল্লাহ সর্বপ্রথম সালাতের হিসাব নেবেন’ (তিরমিজি)। আজকের এই পোস্টে এশার নামাজ ও বেতের নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
Table of Contents
এশার নামাজের ফজিলত
এশার নামাজের শেষে বেতের নামাজ আদায় করতে হয়। বেতের নামাজ ৩ রাকাত। এই পোস্টে বেতের নামাজের নিয়ম আলোচনা করা হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজর
এবং এশার অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। এই দুই নামাজের জন্য অধিক সওয়াব পাওয়া যায়। আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সহজ হয়।এশার নামাজ সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে ভুলে যায় বা সে সময় ঘুমিয়ে থাকায় তা ছুটে যায়, তার কাফফারা হলো যখনই তা মনে হবে,
কিভাবে এশার নামাজ পড়তে হয়
তখনই (সঙ্গে সঙ্গে) নামাজ আদায় করে নেবে।’ (মুসলিম, হাদিস: ৬৮৪)। ১০ রাকাত এশার নামাজে প্রথমে চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে হয়।
দেখুনঃ ফজরের নামাজের নিয়ম
অতঃপর চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হয় এবং শেষে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করতে হয়। এশার নামাজ শেষ হলে বেতরের নামাজ শুরু করতে হয়।
বেতের নামাজের মধ্য দিয়ে নামাজের সমাপ্তি ঘটে। আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে এশার নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা জানতে সক্ষম হবেন।
এশার বেতের নামাজের নিয়ম
বাংলা নিয়তঃ আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে তিন রাকাত বেতরের ওয়াজিব নামাজ আদায় করার জন্য দাড়ালাম আল্লাহু আকবার। ১/ কেবলা মুখী হয়ে বেতের নামাজের নিয়ত বাধতে হবে। নিয়তটি হলোঃনাওাইতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’ লা সালাসা রাক’আতাই সালাতিল বেত্রে ওয়াজিবুল্লাহি তা’লা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজিহাতিল কা’ বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার। ২/ সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
দেখুনঃ যোহরের নামাজের নিয়ম
৩/ সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম যেকোনো বিজোড় সংখ্যক বার পড়তে হবে। ৪/ সামিয়া লিমান হামিদা রব্বানা লাকাল হামদ বলে সিজদায় লুটিয়ে পড়তে হবে। ৫/ সিজদায় গিয়ে যেকোনো বিজোড় সংখ্যক বার সুবহানা রাব্বিয়াল আলা পাঠ করতে হবে। ৬/ আল্লাহু আকবার বলে আবার একইভাবে সেজদা দিতে হবে।এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ হবে। ৭/ দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য যে কোন একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
দেখুনঃ আসরের নামাজের নিয়ম
৮/ প্রথম রাকাতে প্রক্রিয়াগুলো পুনরাবৃত্তি হতে থাকবে। শুধুমাত্র সিজদার পর তাশাহুদ (আত্তাহিয়াতু) পাঠ করতে হবে।এভাবে দ্বিতীয় রাকাত শেষ হবে। ৯/ তৃতীয় রাকাত এ সূরা ফাতিহার পর অন্য যে কোন একটি সূরা মিলিয়ে পাঠ করতে হবে। ১০/ আল্লাহু আকবার বলে দোয়া কুনুত পাঠ করতে হবে। ১১/ পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো দ্বিতীয় রাকাতের মতই তবে এক্ষেত্রে সিজদা দেওয়ার পর তাশাহুদ, দুরুদে ইব্রাহীম এবং দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করতে হবে। ১২/ সর্বোপরি সালাম ফেরাতে হবে এবং সবশেষে দুহাত তুলে মোনাজাত করতে হবে।
এশার নামাজের সময় শুরু ও শেষ
মাগরিবের নামাজের পরে এশার ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায় এবং মধ্যরাত পর্যন্ত সময় থাকে। তবে নামাজ সময়ে পড়াই ভালো।খুব বেশি কাজ থাকলে মধ্যরাতে নামাজ আদায় করা যাবে আবার ফজরের আগ পর্যন্তও আদায় করা যাবে।
দেখুনঃ মাগরিবের নামাজের নিয়ম
এশার নামাজের নিয়ম মহিলাদের
মহিলা ও পুরুষদের নামাজের কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এই পোস্টে এসব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। চার রাকাত সুন্নতঃ ১.প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জায়নামাজের দোয়া পড়তে হয়। ২. এরপর নিয়ত করে আল্লাহু আকবার বলে বুকে হাত দিতে হয়। ৩. সানা পাঠ করার পর সূরা ফাতিহা এবং সেই সাথে যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হয়। ৪. সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম বিজোড় সংখ্যক বার বলতে হয়।
দেখুনঃ এশার নামাজের নিয়ম
৫.সামিয়া লিমান হামিদা রব্বানা লাকাল হামদ পড়তে হয়। ৬. সিজদায় গিয়ে সুবহানা রাব্বিয়াল আলা বেজোড় সংখ্যকবার পড়তে হয়। ৭. আল্লাহু আকবার বলে আবার একইভাবে সিজদা দিতে হয়। ৮. প্রথম রাকাত শেষ হয়। ৯. দ্বিতীয় রাকাত একই প্রক্রিয়ায় করতে হবে। শুধুমাত্র নিয়ত করার প্রয়োজন নেই,সানা পড়ার প্রয়োজন নেই এবং সেজদা দেয়ার পর আত্তাহিয়াতু পড়তে হয়। ১০. তৃতীয় রাকাত প্রথম রাকাতের মতই আদায় করতে হয়( নিয়ত করার প্রয়োজন নেই)।
১১. চতুর্থ রাকাত তৃতীয় রাকাতের মতই।শুধুমাত্র সিজদার পর তাশাহুদ(আত্তাহিয়াতু),দুরুদে ইব্রাহীম এবং মা সূরা পাঠ করতে হয়।সবশেষে সালাম ফিরিয়ে মোনাজাত ধরতে হয়। চার রাকাত ফরজঃসুন্নত এর মতই। তবে দুই রাকাতের পর সুরা ফাতিহাতে অন্য যে কোন সূরা মিলানোর প্রয়োজন নেই।এভাবে চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হয়।দুই রাকাত সুন্নতঃ দুই রাকাত সুন্নত একই প্রক্রিয়ায় আদায় করতে হয়।শুধু নিয়ত ভিন্ন এবং দ্বিতীয় রাকাতে সালাম ফিরিয়ে মোনাজাত করতে হয়।