ফজরের নামাজের নিয়ম, সূরা, নিয়ত এবং সঠিক নিয়মাবলী
দিনের শুরুতে যে নামাজ পড়া হয় তা হল ফজরের নামাজ। ফজরের নামাজ মুসলিমদের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ। ফজরের নামাজ দিয়ে দিনটি শুরু করলে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়,কাজে সফলতা আসে,আল্লাহতালা অনেক বেশি খুশি হন। ফজরের নামাজ সম্পর্কিত হাদিস রয়েছে।
(১) ফজরের সালাত মুমিন ও মুনাফিকের মধ্যে পার্থক্যকারী, কেননা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের জন্য ফজর সালাত আদায় কষ্টকর! (বুখারি হাদিস: ৬৫৭, ৬৪৪, ২৪২০, ৭২২৪; মুসলিম হাদিস ৬৬১)।
(২) রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত আদায় করে, সে ব্যক্তি ওইদিন আল্লাহর জিম্মায় চলে যায়। অর্থাৎ স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা ওই ব্যক্তির দায়িত্ব নেন। (সহিহ মুসলিম, তিরমিজি ২১৮৪)।
Table of Contents
ফজরের নামাজ আগে সুন্নত না ফরজ
ফজরের নামাজ সর্বমোট চার রাকাত।দুই রাকাত সুন্নত ও দুই রাকাত ফরজ।সব সময় আগে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করা উত্তম। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত অন্য যেকোন কিছু থেকে উত্তম এবং এর নেকি ও বেশি।
হাদীস শরীফে বলা হয়েছেঃরাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজর সালাত জামাতের সঙ্গে আদায় করে, আল্লাহ তায়ালা তার আমলে দাঁড়িয়ে সারারাত নফল নামাজ আদায়ের সওয়াব দিয়ে দেন! (সহিহ মুসলিম: ১০৯৬)।
রাসূল (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ভোরে হেঁটে হেঁটে ফজরের সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে প্রবেশ করবে, আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন তার জন্য পরিপূর্ণ আলো দান করবেন। (আবু দাউদ: ৪৯৪)।
ফজরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
ফজরের নামাজের কিছু ধারাবাহিকতা রয়েছে।সেই ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে নামাজ আদায় করা উত্তম। অর্থাৎ প্রথমে দুই রাকাত সুন্নত পড়ে মোনাজাত শেষ করে এরপর দু রাকাত ফরজ পড়তে হয়।
দেখুনঃ ফজরের নামাজের নিয়ম
দু রাকাত ফরজ আদায় করার পর মোনাজাত ধরতে হয়। আমাদের এই ওয়েবসাইটটিতে নামাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেয়া হয়েছে।আজকের এই পোস্টে ফজরের নামাজ আদায়ের নিয়ম,
সর্বমোট কত রাকাত, ফজর নামাজ সম্পর্কিত হাদিস এসকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনাদের বুঝতে সুবিধা হবে।
ফজরের নামাজের নিয়ম
দুই রাকাত সুন্নতঃ জায়নামাজের দোয়া পড়ে, দুই রাকাত সুন্নতের নিয়ত করতে হবে। অতঃপর বুকের নিচে অথবা নাভির নিচে হাত রেখে ছানা পাঠ করে সুরা ফাতেহার সাথে যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম বিজোড় সংখ্যক বার পড়তে হবে।এরপর সামিয়া লিমান হামিদা রব্বানা লাকাল হামদ বলার পর মাথা নিচু করে সিজদায় গিয়ে সুবহানা রাব্বিয়াল আলা বিজোড় সংখ্যক বার বলতে হবে।
দেখুনঃ যোহরের নামাজের নিয়ম
আল্লাহু আকবার বলে আবার একইভাবে সেজদা দিতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতের নিয়ত করার দরকার নেই।একইভাবে সিজদার পর তাশাহুদ, দুরুদ ইব্রাহিম এবং দোয়ায় মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরাতে হবে। সবশেষে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে মোনাজাত ধরতে হবে।এভাবে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করতে হবে।দুই রাকাত সুন্নতের নিয়ত-নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তাআলা মুতাও য়াজজিহান্ ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আক্বার।
দেখুনঃ আসরের নামাজের নিয়ম
দুই রাকাত ফরজঃ দুই রাকাত ফরজ দুই রাকাত সুন্নত এর মধ্যে আদায় করতে হয় তবে এক্ষেত্রে নিয়তের ভিন্নতা রয়েছে দুই রাকাত ফরজের নিয়ত হলো-নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
দেখুনঃ মাগরিবের নামাজের নিয়ম
ফজর নামাজের সময় সূচি
যখন সুবহে সাদিক শুরু হয় তখন থেকে ফজরের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়।এই ওয়াক্ত সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকে। সুবহে সাদিক হলো রাতের শেষে পূর্ব আকাশে যে লম্বাকৃতির আলোর রেখা দেখা যায় সেই সময়।
দেখুনঃ এশার নামাজের নিয়ম