আসরের নামাজের নিয়ম, সূরা, নিয়ত এবং সঠিক নিয়মাবলী
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে তার বান্দার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। নামায দ্বারা যেকোন কাজে সাফল্যের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নামাজ পড়লে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়। নামাজ না পড়লে এর শাস্তি অনেক বেশি। নামাজের মাধ্যমে মন পবিত্র হয়।
নামাজ সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,” তোমরা সালাত সমূহের প্রতি এবং (বিশেষ করে) মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি যত্ন বান হও, এবং আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্যে একান্ত অনুগত অবস্থায় দাড়াও”। (সুরাহ বাকারাহ ২:২৩৮)
“আমি যদি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করি (ক্ষমতা ওঁ সম্পদ দ্বারা) তাহলে তারা সালাত কায়েম করবে, সৎ কাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করবে, আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহর (নিকট)” (সুরাহ হাজ ২২:৪১)।
Table of Contents
আসরের নামাজের নিয়ম কানুন
প্রতিটি নামাজের নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন রয়েছে। আসর নামাজের নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন আছে। সে সকল নিয়ম কানুন অনুসরণ করে নামাজ আদায় করা উত্তম। আসরের নামাজ চার রাকাত সুন্নত এবং চার রাকাত ফরজ সর্বমোট আট রাকাত।
আগে চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে হয়,এরপর চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হয়। এভাবে ধারাবাহিকতায় আসরের নামাজ আদায় করা উত্তম।
আসরের চার রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ম
জায়নামাজে দাঁড়িয়ে সর্বপ্রথম জায়নামাজের দোয়া পাঠ করতে হয়।আসরের চার রাকাত সুন্নতের নিয়ত পড়ে আল্লাহু আকবার বলে সূরা ফাতিহা এবং সেই সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হয়।দুই হাঁটুর মাঝ বরাবর হাত রেখে ৩,৫ অথবা ৭ বার(সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম)পাঠ করতে হয়।
দেখুনঃ ফজরের নামাজের নিয়ম
পাঠ করা শেষ হলে (সামিয়া লিমান হামিদা রব্বানা লাকাল হামদ)বলে আস্তে আস্তে নিচু হয়ে সিজদা দিতে। সিজদায় গিয়ে (সুবহানা রাব্বিয়াল আলা)৩,৫ বা ৭ বার পাঠ করতে হয়।তারপর পুনরায় ‘আল্লাহু আকবার’ বলে একই প্রক্রিয়ায় সিজদা দিতে হয়। এভাবে অবশিষ্ট রাকাত গুলো আদায় করতে হয়।তবে দ্বিতীয় রাকাতে সিজদা দেওয়ার পর তাশাহুদ পাঠ করা আবশ্যক এবং চতুর্থ রাকাতে সিজদার পর তাশাহুদ,দুরুদ শরীফ( দুরুদে ইব্রাহীম)এবং দোয়ায়ে মাসুরা পড়তে হয়। অতঃপর সালাম ফিরানো এবং মোনাজাতের মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হয়।
দেখুনঃ যোহরের নামাজের নিয়ম
আসরের চার রাকাত সুন্নত এর নিয়তঃ “নাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল আসরি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আকবর”।বাংলায় নিয়ত- “আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে আসরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করার জন্য দাঁড়ালাম আল্লাহু আকবার”।
আসরের ৪ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
জায়নামাজের দোয়া, চার রাকাত ফরজের নিয়ত, সূরা ফাতিহা এবং সূরা ইখলাস, সূরা নাস,সূরা ফালাক ইত্যাদি যেকোনো সূরা, সিজদা দেওয়া, তাকবীরে তাহরীমা, তাশাহুদ, দুরুদে ইব্রাহীম দোয়ায়ে মাসুরা,সালাম ফিরানো, মোনাজাত ধরা ইত্যাদি প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে আসরের চার রাকাত ফরজ আদায় করতে হয়।
দেখুনঃ আসরের নামাজের নিয়ম
আসরের চার রাকাত ফরজ চার রাকাত সুন্নত এর মতই। পার্থক্য শুধু দুই রাকাতে। প্রথম দুই রাকাতে সুরা মেলানোর পর পরবর্তী রাকাত গুলোতে সূরা মিলানোর প্রয়োজন নেই।শুধু সুরা ফাতেহা পাঠ করলেই হবে।আসরের নামাজের নিয়ত বাংলাতেও পাঠ করা যায়।
দেখুনঃ মাগরিবের নামাজের নিয়ম
আসরের চার রাকাত ফরজের নিয়তঃনাওয়াইতুয়ান উসালিয়া-লিল্লাহি তা’আলা আরবায়া রাকাআতি ছালাতিল আসরি ফারদুল্লাহি তা’য়াল মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আকবর।
আছরের নামাজের সময়সূচি
প্রতিটি ওয়াক্তের নির্দিষ্ট সময়সূচী থাকে।ওয়াক্তের নামাজ ওয়াক্তে পড়াই উত্তম। যোহরের ওয়াক্তের পরপরই আসরের ওয়াক্ত শুরু হয়,সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত থাকে। তবে সূর্যের রং হলদে হওয়ার আগেই আসরের নামাজ পড়া উচিত। তবে এর আগে নামাজ আদায় করা ভালো। এতে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়।
দেখুনঃ এশার নামাজের নিয়ম