রসুন খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা ও অপকারিতা [রসুন ও মধু খাওয়ার নিয়ম] জেনে নিন
রসুনের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রান্নায় বেশ উপকারী একটি অংশ। মাংস থেকে শুরু করে সবজি, ভাজি বা ভর্তা তৈরিতে রসুনের জুড়ি নেই। রসুন খাওয়ার কতগুলো নিয়ম রয়েছে যা অনেকের জানা নেই।
তাই আজকের পোস্টটিতে রসুন খাওয়ার নিয়ম সহ রসুনের বিভিন্ন উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করব। রসুন কাঁচা, সিদ্ধ, ভাজা যেকোনোভাবে খাওয়া যায়। রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামক এক ধরনের সালফার যৌগ
আর এই সালফার যৌগটির কারণেই রসুনের ঝাঁঝালো গন্ধ ও ভেষজগুণ পরিলক্ষিত হয়। অ্যালিসিন খুবই স্বল্পস্থায়ী হওয়ার কারণে রান্না করা হলে রসুনের ভেষজগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।
তাই সব থেকে ভালো উপকারিতা পেতে হলে কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিন কয়েক কোয়া কাঁচা রসুন খেলে শরীরের যৌবন দীর্ঘস্থায়ি হয়। ব্রণের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া দূর করতে প্রতিদিন
একটি করে কাঁচা রসুনের কোয়া চিবিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। রসুনের দুই থেকে তিনটি কোয়া কুচি করে 1 টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন খেলে শরীর শরীর ফিট এনার্জিতে ভরপুর থাকবে।
রসুন কৃমি নাশ করতে, শ্বাসকষ্ট কমাতে, হজমে সহায়তা করতে এবং প্রস্রাবের সমস্যা, শ্বাসনালিকে মিউকাস মুক্ত করতে, এজমা রোগের উপশম, হাইপার টেনশন কমাতে, চুল পাকা কমাতে, শরীরে কোলেস্টেরলের লেভেল কমাতে,
হাড়ের বিভিন্ন রোগের নিরাময়ে রসুন সাহায্য করে। ভেষজ গুন এর জন্য কাঁচা রসুন বেশি উপযোগী। রসুনে থাকা ইস্ট্রোজেন হাড় শক্ত করতে সহায়তা করে। রসুনের শুধু মাত্র 2 থেকে 4 কোয়া প্রতিদিন চিবিয়ে খেলে
শরীরের কোলেস্ট্রল দুই মাসের মধ্যে কন্ট্রোলে চলে আসবে। রসুনের রস মাথায় লাগালে চুল পড়া কমে যায় এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। রসুনের থাকা জিংক ও কপারের চুলের গোড়ায় রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে
যার ফলে চুল হয়ে ওঠে শক্ত মজবুত এবং শক্তিশালী। রসুনের মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এলিসিন এটি ক্যান্সার প্রতিরোধের অত্যন্ত কার্যকর, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস জাতীয় রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
সকল জিনিসের উপকারিতার পাশাপাশি থাকে কিছু ক্ষতিকর দিক। তেমন রসুনের উপকারিতা পাশাপাশি রয়েছে বেশকিছু অপকারিতা অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার যকৃতের জন্য ক্ষতিকর।
রসুনের সালফার পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে যা থেকে ডায়রিয়া হতে পারে। খালি পেটে রসুন খেলে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। বেশি বেশি রসুন খেলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে, অতিরিক্ত রসুন খেলে শরীরে ঘামের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
অতিরিক্ত রসুন খেলে চোখের কর্নিয়া ও আইরিশের মাঝে রক্তক্ষরণ হতে পারে যা হাইফিমা নামে পরিচিত। এ রোগের ফলে মানুষের চোখের দৃষ্টিশক্তি চলে যেতে পারে। শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের রসুনের কোনো জুড়ি নেই।
তবে সবার ক্ষেত্রে কিন্তু রসুন উপযোগী নয় কারো কারো জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণও হতে পারে। খালি পেটে রসুন খেলে অনেকের ডায়রিয়া হতে পারে। আবার গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে রসুন খাওয়া বিপদজনক হতে পারে।
গবেষণায় জানা গেছে রসুনে থাকা অ্যালিসিন নামক উপাদান লিভারে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে তাই অতিরিক্ত রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অতিরিক্ত রসুন খেলে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। অতিরিক্ত রসুন খেলে হাইফিমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।